Updated on March 18th, 2023 at 11:24 am(BST)

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকায় মৌচাক মার্কেট

প্রায় ৭০ বছর আগে নির্মিত রাজধানীর মৌচাক মার্কেট ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। মার্কেটটি ভেঙে ফেলার জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে (ডিএসসিসি) চিঠিও দিয়েছে রাজউক।

মৌচাক মার্কেটের ভবনটি পাঁচতলা। প্রথম তলায় খাবারের দোকান। দ্বিতীয় তলায় জুয়েলারি সামগ্রী। তৃতীয় তলায় বিক্রি হয় প্লাস্টিক ও অন্যান্য জিনিসপত্র। চতুর্থ তলায় রয়েছে পোশাকের দোকান। পঞ্চম তলায় একটি মসজিদ এবং চীনা রেস্তোরাঁ রয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৪৫০টি দোকান রয়েছে মার্কেটটিতে।

ঝুঁকিপূর্ণ হলেও ঈদের আগে মার্কেটটিতে ‘ঝুঁকিপূর্ণ নোটিশ’ দিতে কৌশলী রাজউক। নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে মার্কেটের মালিক ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ওপর দায় ন্যস্ত করেছে। তবে ডিএসসিসির পক্ষ থেকে রাজউকের অ্যাসেসমেন্ট রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। তারা সেই অ্যাসেসমেন্ট রিপোর্ট দেখেই সিদ্ধান্ত নেবে।

রাজউকের পক্ষ থেকে সিটি করপোরেশন ও ফায়ার সার্ভিসকে ঝুঁকিপূর্ণের বিষয়টি অবহিত করে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে সিটি করপোরেশন বিষয়টি নিয়ে লুকোচুরি করছে।

ঈদের আগে ব্যবসায় ধস নামতে পারে- এমন আশঙ্কা থেকেই তালিকাটি প্রকাশ করতে অনীহা দুই সংস্থার। তাদের দাবি- এ মুহূর্তে ঝুঁকিপূর্ণের নোটিশ দিলে ক্রেতারা মার্কেটে আসবেন না। তাতে ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়বেন।

জানা গেছে, রাজউকের আরবান রেজিলিয়ান্স প্রকল্পের আওতায় মৌচাক মার্কেটের কারিগরি দিকটি পরীক্ষা করা হয়। কারিগরি পরীক্ষার পর রাজউকের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, মার্কেটটি ৭০ বছর আগে নির্মিত। কংক্রিটের স্ট্রেন্থ পিএসআই থাকার কথা ৩৫০০। কিন্তু বর্তমানে এর চেয়ে অনেক কম পিএসআই রয়েছে। পাশাপাশি ভূমিকম্প সহনীয় রাখতে হলে কমপক্ষে ৬০ গ্রেডের রড থাকতে হয়; রয়েছে ৪০ গ্রেডের। তা ছাড়া দীর্ঘদিন ব্যবহার করার ফলে রডের ধারণক্ষমতা কমে গেছে।

এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ আমাদের সময়কে বলেন, ‘রাজউকের চিঠি আমার দপ্তরে আসেনি। আমি এ বিষয়ে জানি না।’

একই কথা বলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. সিরাজুল ইসলাম। তিনি আমাদের সময়কে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।’

রাজউকের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ‘নোটিশ এত দিনে দেওয়া হতো। সামনে ঈদ, ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন, তাই সিটি করপোরেশন নোটিশ দিচ্ছে না।’

রাজউকের আরবান রেজিলিয়ান্স প্রকল্পের পরিচালক আবদুল লতিফ হেলালী আমাদের সময়কে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক একটি প্রতিষ্ঠান দিয়ে কাঠামোগত পরীক্ষা করিয়েছি। আমাদের কাজ হলো- চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট সংস্থায় সুপারিশ করা। সেটি করেছি। এখন ভাঙবে কিনা, সেটি তাদের বিষয়।’

ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এর আগে ২০১৪ সালের ৭ মে রাজউক মার্কেটের ভবনমালিককে একটি চিঠি দেয়। ওই চিঠিতে বলা হয়, ইমারতটি জীর্ণ ও দৃশ্যত ঝুঁকিপূর্ণ মনে হওয়ায় বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগকে দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়ে কাঠামোগত উপযুক্ততার সনদ দাখিল করার অনুরোধ করা হলো। একই সঙ্গে ভবনটির কাঠামোগত উপযুক্ততা নিশ্চিত হয়ে ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হলো।

রাজউকের চিঠি পাওয়ার পর বুয়েট পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সুপারিশসহ প্রতিবেদন রাজউকে দাখিল করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভবনমালিককে আরেকটি চিঠি দেয় রাজউক। বুয়েটের কাঠামোগত মূল্যায়ন প্রতিবেদনের পরামর্শ ও কর্তৃপক্ষের ওই নির্দেশনা সত্ত্বেও কাঠামোগত ঝুঁকি হ্রাসে ব্যবস্থা না নিয়ে দায়িত্বহীনভাবে মার্কেট ব্যবহার অব্যাহত রাখা হয়েছে, যা জীবন ও সম্পদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এবং ইমারত নির্মাণ আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

Total views 71

মূল প্রকাশকের সংবাদটি পড়তে এই লিংকে ক্লিক করুন Click Here.  উপরের সংবাদ এবং ছবিটি থেকে সংগ্রহীত এবং এই সংবাদটির মূল প্রকাশক কর্তিক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই সংবাদটি কোন প্রকার সংশোধন পরিবর্তন অথবা পরিবর্ধন ছাড়া অফিশিয়াল ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত। প্রকাশক কর্তিক যে কোনো আপত্তি webbangladeshgroup@ gmail.com গ্রহণ করা হয়। এই সংবাদে প্রকাশিত সংবাদ, তথ্য বা মতবাদ এর সাথে ওয়েব বাংলাদেশ এর কোন সম্পর্ক নাই এবং কোন প্রকার দায় ভার গ্রহণ করে না।