Updated on March 24th, 2023 at 9:05 am(BST)

রোজার পরে বিএনপি জোরালো করবে কর্মসূচি

পবিত্র মাহে রমজানে বড় কোনো কর্মসূচিতে যাচ্ছে না বিএনপি। তবে রমজানের পরে কর্মসূচি জোরদার করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। সে লক্ষ্যে ইউনিয়নসহ সারা দেশে দলের সাংগঠনিক ইউনিটগুলোতে সহস্রাধিক ইফতার মাহফিল আয়োজনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। ঘরোয়া এই কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের আন্দোলনের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হবে বলে জানা গেছে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির বৈঠক ডাকার বিষয়েও আলোচনা চলছে।

রমজানে কর্মসূচির বিষয়ে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, রমজান সংযমের মাস। বিএনপি এ মাসে ইফতার মাহফিলসহ ঘরোয়া নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পরবর্তী আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নেবে।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার স্থায়ী কমিটির বৈঠকে রমজানের কর্মসূচি কী হতে পারে তা নিয়ে শীর্ষ নেতারা মত দিয়েছেন। সারা দেশের সব ইউনিয়নে ইফতার মাহফিল আয়োজনের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে কেউ কেউ বৈঠকে ইফতারের আগে মানববন্ধনের মতো কিছু করা যায় কি না সে পর্যন্ত প্রস্তাব দিয়েছেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এবার ইফতারকেন্দ্রিক রাজনীতিতে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত সারা দেশে সহস্রাধিক ইফতার মাহফিলের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। রমজানে ইফতারকেন্দ্রিক রাজনীতির মধ্য দিয়ে সারা দেশের কর্মীদের সক্রিয় ও সজাগ রাখতে চায় দলটি। এ ছাড়া যুগপৎ শরিকদের সাথে সম্পর্ক আরো মজবুত করার পাশাপাশি আন্দোলনে সমর্থন আদায়ে বিভিন্ন পেশাজীবী এবং প্রভাবশালী দেশের কূটনীতিকদের সাথেও সম্পর্ক জোরদার করতে চায় হাইকমান্ড। এর বাইরে ইফতারের মাধ্যমে যুগপৎ আন্দোলনের বাইরে থাকা দলগুলোকেও কাছে টানার চেষ্টা চালাবে বিএনপি। দাবি না মানলে রমজানের পর বড় আন্দোলনে নামার পরিকল্পনা রয়েছে হাইকমান্ডের।

আগামীকাল শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে রমজান মাস। রমজানে বিএনপির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কেন্দ্রীয়ভাবে চারটি ইফতার মাহফিল আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য সায়রুল কবির খান জানান, প্রথম রোজায় এতিম-আলেম-ওলামাদের সম্মানে, চতুর্থ রোজায় বিশিষ্ট নাগরিক ও পেশাজীবী নেতৃবৃন্দের সম্মানে, সপ্তম রোজায় ঢাকার বিদেশী কূটনীতিকদের সম্মানে এবং এগারো রোজায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের সম্মানে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।

জানা গেছে, এবারই প্রথম ঢাকা মহানগরের (উত্তর ও দক্ষিণ) ৫০টি থানায় ইফতার মাহফিল করা হবে। তৃণমূল নেতাকর্মীদের অভিযোগ, অতীতে সারা দেশে কঠোর আন্দোলন হলেও ঢাকায় বড় আন্দোলন না হওয়ায় সার্বিকভাবে আন্দোলন তখন সফলতা পায়নি। সে জন্য আগামীতে একদফা আন্দোলন সামনে রেখে এবার ইফতার মাহফিলের মধ্য দিয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদের সংগঠিত ও সক্রিয় করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ঢাকা মহানগর ছাড়াও দেশের সাংগঠনিক জেলা, উপজেলা, মহানগরের বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডেও এবার ইফতারের আয়োজন করা হবে।

এ প্রসঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম বলেন, এবার রমজানে কেন্দ্রীয় ছাড়াও ঢাকা মহানগরের (উত্তর-দক্ষিণ) সব থানায় ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হবে। কেন্দ্রীয়, মহানগর ও অঙ্গসংগঠন নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে প্রতিটি ইফতার মাহফিল কর্মিসভায় পরিণত হয়ে যাবে। তিনি আরো বলেন, এই সরকার গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির নিশ্চয়তা দিতে পারছে না। দফায় দফায় নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো হচ্ছে। এতে করে মানুষ চরম অসহায় বোধ করছে। তারপরও তারা আবারো আরেকটি প্রহসনের নির্বাচন করে ক্ষমতায় থাকতে চাচ্ছে। ইফতার মাহফিলের মধ্য দিয়ে এসবের বিরুদ্ধে তৃণমূলে বার্তা দেয়া হবে। যাতে জনগণ সজাগ, সচেতন ও সংগঠিত হয়ে নিজেদের দাবি নিয়ে আন্দোলনে আরো বেশি করে সম্পৃক্ত হয়।

এ দিকে আন্দোলন সামনে রেখে বিএনপির পাশাপাশি দলের অঙ্গসংগঠনের পক্ষ থেকেও এবার ইফতারের আয়োজন করা হবে। জাতীয়তাবাদী যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল এবার দশ সাংগঠনিক বিভাগে এই আয়োজন করবে। কৃষক দল কেন্দ্রীয়ভাবে একটি ইফতারের পাশাপাশি দশ সাংগঠনিক বিভাগে ইফতার মাহফিল করবে। ছাত্রদলও ইফতার মাহফিল আয়োজনের চিন্তাভাবনা করছে।
এ ছাড়া যুগপৎ আন্দোলনের শরিক কয়েকটি দল ও জোটের পক্ষ থেকেও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হবে। গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এলডিপি ও গণফোরাম ইফতার মাহফিলের আয়োজন করবে। এ ছাড়া ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশসহ (ড্যাব) বিএনপি অনুসারী বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকেও এই আয়োজন থাকবে।

যশোর জেলা বিএনপির সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, করোনা মহামারীর সময় ছাড়া আমরা বরাবরই ইফতারের আয়োজন করে থাকি, এবারো করব। তবে আন্দোলন ও নির্বাচনের বছর হওয়ায় এবার ইফতার মাহফিলকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। কর্মীদের সক্রিয় ও সজাগ করার জন্য যশোর জেলা ছাড়াও এর অধীন উপজেলা, ইউনিয়ন এমনকি ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত ইফতার মাহফিল করার চিন্তা রয়েছে। এসব ইফতার মাহফিলের মধ্য দিয়ে নিজেদের মধ্যে ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ববোধ আরো সুদৃঢ় হবে, যা আগামীর আন্দোলন সফলে সহায়ক হবে।

দলীয় সূত্র জানায়, এবার রমজানে ঘরোয়া রাজনীতির পাশাপাশি জনসম্পৃক্ত ইস্যু নিয়েও দুই একটি কর্মসূচি দিতে পারে বিএনপি।
দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, গ্যাস-বিদ্যুতের দফায় দফায় মূল্যবৃদ্ধিসহ জনদুর্ভোগ এবং সরকারের দুর্নীতি ও লুটপাটের প্রতিবাদে রমজানে মানববন্ধনের মতো কর্মসূচি দেয়া হতে পারে। এ ছাড়া রোজায় দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির বৈঠক করার চিন্তাও রয়েছে হাইকমান্ডের। এটা বিভাগওয়ারিও হতে পারে।

বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু বলেন, রমজানে ঘরোয়া কর্মসূচি থাকবে, সাংগঠনিক কার্যক্রম চলবে, ইফতার মাহফিলও হবে। এর বাইরে পরিবেশ-পরিস্থিতি অনুযায়ী রাস্তার কর্মসূচিও থাকতে পারে।

Total views 167

মূল প্রকাশকের সংবাদটি পড়তে এই লিংকে ক্লিক করুন Click Here.  উপরের সংবাদ এবং ছবিটি থেকে সংগ্রহীত এবং এই সংবাদটির মূল প্রকাশক কর্তিক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। এই সংবাদটি কোন প্রকার সংশোধন পরিবর্তন অথবা পরিবর্ধন ছাড়া অফিশিয়াল ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত। প্রকাশক কর্তিক যে কোনো আপত্তি webbangladeshgroup@ gmail.com গ্রহণ করা হয়। এই সংবাদে প্রকাশিত সংবাদ, তথ্য বা মতবাদ এর সাথে ওয়েব বাংলাদেশ এর কোন সম্পর্ক নাই এবং কোন প্রকার দায় ভার গ্রহণ করে না।